খসড়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১৯: কিছু প্রস্তাব
সম্প্রতি ড. কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটির পেশ হওয়া নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৯ খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ১৯৬৮ ও ১৯৮৬/১৯৯২ পরে এই তৃতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৯ খসড়া। সেই প্রেক্ষিতে কিছু বক্তব্য আছে।
এই খসড়াতে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছে- বিদ্যালয় শিক্ষা, উচ্চতর শিক্ষা, শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থা, শিক্ষায় প্রযুক্তি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, বয়স্ক শিক্ষা ও শিক্ষায় ভারতীয় ভাষাসমূহ।
প্রথমেই বিদ্যালয় শিক্ষা। যথার্থ ভাবেই তিন থেকে আট বছরের শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু, বক্তব্য হলো, সব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এক সার্বিক আইনানুগ অথরিটি গঠন করা জরুরী। খসড়াতে তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে রাজ্য স্তরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, শিশুদের উপর চাপের কথা মাথায় রেখে শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণীতে এই ধরনের সার্বিক পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ। আবার, সর্বজনীন শিক্ষা অধিকার আইন ২০০৯ সংশোধন করে ০-১৮ বছর পর্যন্ত সব শিশুদের শিক্ষার অধিকার দেওয়া দরকার। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক করে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর বাস্তবোচিত। এই স্তরে প্রতিটি শ্রেণীতেই জেলাভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া দরকার। শেষে, দ্বাদশ শ্রেণীতে রাজ্যস্তরে এক সার্বিক পরীক্ষা নেওয়া দরকার।
খসড়াতে যে ‘স্কুল কমপ্লেক্সের’ সুপারিশ করা হয়েছে, তা খুবই নতুনত্বের দাবী রাখে। শুধু বক্তব্য হলো, এই কমপ্লেক্সে ‘বিশেষ শিশুদেরও’ যুক্ত করা দরকার। আরেকটি পরামর্শ হলো, এই কমপ্লেক্সের আওতায় বেসরকারি বিদ্যালয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পরিচালিত বিদ্যালয়গুলিকেও আনা প্রয়োজন।
এবার উচ্চতর শিক্ষা। এই স্তরে ‘জাতীয় উচ্চতর শিক্ষা রেগুলেটরি অথরিটি’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার আওতায় অন্য সবধরনের রেগুলেটরি সংস্থা, যেমন, মেডিকেল কাউন্সিল, নার্সিং কাউন্সিল, বার কাউন্সিল, আর্কিটেকচুয়াল কাউন্সিল, একাউটেন্ট বডি ইত্যাদি সংস্থাগুলোকে আনা দরকার। সবধরনের ‘উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’কেই এই অথরিটির আওতায় আনা প্রয়োজন। আরেকটি বিষয়। উচ্চতর শিক্ষায় ‘কোলাবোরেটিভ স্টাডিজ’ খুব দরকার। যেমন, একই ক্লাসে দুই/তিন/চার বিষয়ের শিক্ষকদের একটি বিশেষ বিষয়ের উপর ক্লাস নেওয়ার শিক্ষা-পদ্ধতি চালু করা দরকার। তবেই এক সার্বিক তথা সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠতে পারে। সেই সঙ্গে একেবারে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তর থেকেই ভারতীয় জীবনধারায় বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পের ধারাবাহিক ইতিহাস পড়ানো দরকার। লিবারেল আর্টস শিক্ষার যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা এই ইতিহাসের পরিপূরক।
এবার আসা যাক শিক্ষা প্রশাসন-ব্যবস্থায়। খসড়াতে যে ‘জাতীয় শিক্ষা কমিশন’ গঠনের সুপারিশ রয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সরাসরি কাজ করবে। তবে, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদলিয়ে শুধুমাত্র শিক্ষা মন্ত্রক করার পরিবর্তে তা ‘শিক্ষা ও মানব সম্পদ মন্ত্রক’ করা যেতে পারে। কারণ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ পরস্পরের পরিপূরক। আর, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের- স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত- গভর্নিং কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ভারতের সংসদের রাজ্যসভার গঠন পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন, যাতে শিক্ষা-প্রশাসনে সর্বত্র স্তরে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
শিক্ষায় আর্থিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে খসড়া যে সুপারিশ করেছে, তার বন্টন নিয়ে প্রশ্ন আছে। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেশি ব্যয় হওয়া দরকার একেবারে নীচের স্তরে অর্থাৎ প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা-ব্যবস্থায়। আর, কোম্পানি আইন সংশোধন করে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি খাতে ব্যয়ের কমপক্ষে ২০ শতাংশ বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষায় প্রযুক্তি। সব শিক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুতের ব্যবস্থার সুপারিশ এককথায় অপরিহার্য। কারণ, বিদ্যুৎ ছাড়া অন্য সব শিক্ষা-প্রযুক্তি ব্যবস্থা প্রায় অচল। তবে, উপযুক্ত রক্ষাব্যবস্থা ছাড়া অনলাইন ডিজিটাল রিপোজিটরি ব্যবহার করা বিপদজনক। সে ব্যবস্থার জন্য সার্বিক তথ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা জরুরী।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারত খুবই পেছিয়ে আছে। এক্ষেত্রে একটি ‘সর্বভারতীয় বৃত্তিমূলক শিক্ষা অথরিটি’ গঠন করা দরকার। আবার, বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব সুপারিশ খসড়াতে করা হয়েছে তার যথার্থ প্রয়োগ ও সম্পাদনা দেখার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ‘সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডাল্ট এডুকেশন’কে দিতে হবে। আসলে, বৃত্তিমূলক ও একাডেমিক শিক্ষার মধ্যে তথাকথিত বিভেদের প্রাচীর ভেঙে ফেলে সামঞ্জস্যপূর্ণ সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরী।
এবার বিতর্কিত বিষয়- শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ভাষা। ত্রি-ভাষা সূত্র নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে ভারতীয় জীবনধারার আধার কিন্তু সংস্কৃত ভাষা। সেই ভাষার প্রসার ও প্রচারের জন্য ‘জাতীয় সংস্কৃত শিক্ষা আয়োগ’ গঠন করা যেতে পারে এবং প্রতিটি স্কুল কমপ্লেক্সে সংস্কৃত ভাষাচর্চা যেন হয়।
শেষে, একটি গুরুত্বপূর্ণ তথা বিতর্কিত বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই। সংবিধান-প্রদত্ত অধিকার যা ধর্মমতাবলম্বী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভোগ করে, তাদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই নতুন শিক্ষা নীতি কিভাবে, কতটা প্রয়োগ করা যাবে তার দিক নির্দেশ সেভাবে পাওয়া যায়নি। শিক্ষা যৌথ তালিকায় থাকলেও এই শিক্ষা নীতি কিভাবে বিভিন্ন রাজ্যে লাগু হবে তারও দিকনির্দেশ সেভাবে নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন বা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
এই লেখাটি আজকে 'যুগশঙ্খ' কাগজে 'উনিশের নয়া শিক্ষানীতির প্রয়োগে আইন সংশোধন জরুরি' শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।
@ সুজিৎ রায়
23.07.2019
সম্প্রতি ড. কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটির পেশ হওয়া নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৯ খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ১৯৬৮ ও ১৯৮৬/১৯৯২ পরে এই তৃতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৯ খসড়া। সেই প্রেক্ষিতে কিছু বক্তব্য আছে।
এই খসড়াতে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছে- বিদ্যালয় শিক্ষা, উচ্চতর শিক্ষা, শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থা, শিক্ষায় প্রযুক্তি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, বয়স্ক শিক্ষা ও শিক্ষায় ভারতীয় ভাষাসমূহ।
প্রথমেই বিদ্যালয় শিক্ষা। যথার্থ ভাবেই তিন থেকে আট বছরের শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু, বক্তব্য হলো, সব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এক সার্বিক আইনানুগ অথরিটি গঠন করা জরুরী। খসড়াতে তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে রাজ্য স্তরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, শিশুদের উপর চাপের কথা মাথায় রেখে শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণীতে এই ধরনের সার্বিক পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ। আবার, সর্বজনীন শিক্ষা অধিকার আইন ২০০৯ সংশোধন করে ০-১৮ বছর পর্যন্ত সব শিশুদের শিক্ষার অধিকার দেওয়া দরকার। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক করে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর বাস্তবোচিত। এই স্তরে প্রতিটি শ্রেণীতেই জেলাভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া দরকার। শেষে, দ্বাদশ শ্রেণীতে রাজ্যস্তরে এক সার্বিক পরীক্ষা নেওয়া দরকার।
খসড়াতে যে ‘স্কুল কমপ্লেক্সের’ সুপারিশ করা হয়েছে, তা খুবই নতুনত্বের দাবী রাখে। শুধু বক্তব্য হলো, এই কমপ্লেক্সে ‘বিশেষ শিশুদেরও’ যুক্ত করা দরকার। আরেকটি পরামর্শ হলো, এই কমপ্লেক্সের আওতায় বেসরকারি বিদ্যালয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পরিচালিত বিদ্যালয়গুলিকেও আনা প্রয়োজন।
এবার উচ্চতর শিক্ষা। এই স্তরে ‘জাতীয় উচ্চতর শিক্ষা রেগুলেটরি অথরিটি’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার আওতায় অন্য সবধরনের রেগুলেটরি সংস্থা, যেমন, মেডিকেল কাউন্সিল, নার্সিং কাউন্সিল, বার কাউন্সিল, আর্কিটেকচুয়াল কাউন্সিল, একাউটেন্ট বডি ইত্যাদি সংস্থাগুলোকে আনা দরকার। সবধরনের ‘উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’কেই এই অথরিটির আওতায় আনা প্রয়োজন। আরেকটি বিষয়। উচ্চতর শিক্ষায় ‘কোলাবোরেটিভ স্টাডিজ’ খুব দরকার। যেমন, একই ক্লাসে দুই/তিন/চার বিষয়ের শিক্ষকদের একটি বিশেষ বিষয়ের উপর ক্লাস নেওয়ার শিক্ষা-পদ্ধতি চালু করা দরকার। তবেই এক সার্বিক তথা সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠতে পারে। সেই সঙ্গে একেবারে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তর থেকেই ভারতীয় জীবনধারায় বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পের ধারাবাহিক ইতিহাস পড়ানো দরকার। লিবারেল আর্টস শিক্ষার যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা এই ইতিহাসের পরিপূরক।
এবার আসা যাক শিক্ষা প্রশাসন-ব্যবস্থায়। খসড়াতে যে ‘জাতীয় শিক্ষা কমিশন’ গঠনের সুপারিশ রয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সরাসরি কাজ করবে। তবে, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদলিয়ে শুধুমাত্র শিক্ষা মন্ত্রক করার পরিবর্তে তা ‘শিক্ষা ও মানব সম্পদ মন্ত্রক’ করা যেতে পারে। কারণ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ পরস্পরের পরিপূরক। আর, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের- স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত- গভর্নিং কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ভারতের সংসদের রাজ্যসভার গঠন পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন, যাতে শিক্ষা-প্রশাসনে সর্বত্র স্তরে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
শিক্ষায় আর্থিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে খসড়া যে সুপারিশ করেছে, তার বন্টন নিয়ে প্রশ্ন আছে। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেশি ব্যয় হওয়া দরকার একেবারে নীচের স্তরে অর্থাৎ প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা-ব্যবস্থায়। আর, কোম্পানি আইন সংশোধন করে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি খাতে ব্যয়ের কমপক্ষে ২০ শতাংশ বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষায় প্রযুক্তি। সব শিক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুতের ব্যবস্থার সুপারিশ এককথায় অপরিহার্য। কারণ, বিদ্যুৎ ছাড়া অন্য সব শিক্ষা-প্রযুক্তি ব্যবস্থা প্রায় অচল। তবে, উপযুক্ত রক্ষাব্যবস্থা ছাড়া অনলাইন ডিজিটাল রিপোজিটরি ব্যবহার করা বিপদজনক। সে ব্যবস্থার জন্য সার্বিক তথ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা জরুরী।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারত খুবই পেছিয়ে আছে। এক্ষেত্রে একটি ‘সর্বভারতীয় বৃত্তিমূলক শিক্ষা অথরিটি’ গঠন করা দরকার। আবার, বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব সুপারিশ খসড়াতে করা হয়েছে তার যথার্থ প্রয়োগ ও সম্পাদনা দেখার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ‘সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডাল্ট এডুকেশন’কে দিতে হবে। আসলে, বৃত্তিমূলক ও একাডেমিক শিক্ষার মধ্যে তথাকথিত বিভেদের প্রাচীর ভেঙে ফেলে সামঞ্জস্যপূর্ণ সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরী।
এবার বিতর্কিত বিষয়- শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ভাষা। ত্রি-ভাষা সূত্র নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে ভারতীয় জীবনধারার আধার কিন্তু সংস্কৃত ভাষা। সেই ভাষার প্রসার ও প্রচারের জন্য ‘জাতীয় সংস্কৃত শিক্ষা আয়োগ’ গঠন করা যেতে পারে এবং প্রতিটি স্কুল কমপ্লেক্সে সংস্কৃত ভাষাচর্চা যেন হয়।
শেষে, একটি গুরুত্বপূর্ণ তথা বিতর্কিত বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই। সংবিধান-প্রদত্ত অধিকার যা ধর্মমতাবলম্বী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভোগ করে, তাদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই নতুন শিক্ষা নীতি কিভাবে, কতটা প্রয়োগ করা যাবে তার দিক নির্দেশ সেভাবে পাওয়া যায়নি। শিক্ষা যৌথ তালিকায় থাকলেও এই শিক্ষা নীতি কিভাবে বিভিন্ন রাজ্যে লাগু হবে তারও দিকনির্দেশ সেভাবে নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন বা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
এই লেখাটি আজকে 'যুগশঙ্খ' কাগজে 'উনিশের নয়া শিক্ষানীতির প্রয়োগে আইন সংশোধন জরুরি' শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।
@ সুজিৎ রায়
23.07.2019
No comments:
Post a Comment